মেয়েদের জন্য বিপদজনক এমন দশটি দেশ রয়েছে, যেখানে মেয়েরা কোন ভাবেই তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারেনা, তাদের অনেক বেশি সীমাবদ্ধ জবন যাপন করতে হয়। তার মধ্যে অনেক সময় তাদের কোন কারন ছাড়াই বাধ্য করা হয় পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়ে বিয়েতে আবদ্দ হতে, কিছু কিছু জায়গা আছে যেখানে মেয়েরা কোন প্রকার মত প্রকাশের স্বাধীনতা পায়না, আবার নাইজার ও নাইজেরিয়ার মতো দেশ ও আছে যেখানে ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে তাদের খতনা করাতে বাধ্য করা হয়।
১০. আফগানিস্থানঃ ১৯১৯ সালের দিকে আফগানিস্তানে নারী ভোটারদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হতো, তখন নারীদের সমঅধিকারের দিকেও বেশ সুনজর ছিল দেশটির। কিন্তু ১৯৬৬ সালে তালেবানদের আফগান দখলের পরে ধীরে ধীরে সব কিছুই বদলে যেতে থাকে। তারা নারীদের জন্য ড্রেস কোড চালু করে, এবং তাদের সবধরনের স্বাধীনতা মুটামটি ভাবে খর্ব করে নেয়। ২০০১ সালে আমেরিকা আফগান আক্রমন করলেও নারী অধিকার সেখানে এখনো কোন ভাবেই প্রতিষ্ঠা করা সম্ভাব হয়নি। হিউমেন রাইটস ওয়াটসের মতে আফগানিস্থানে এখনো তিন ভাগের এক ভাগ নারী ১৮ বছরের আগেই বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়। এছাড়া নারীদের আত্মহত্যার দিক থেকে আফগানিস্থান শীর্ষ ৩ টির একটি দেশ। নারী শিক্ষার দিক থেকে দেশটি খুব বেশি পিছিয়ে আছে, প্রায় ৪৬ % নারী সম্পূর্ণ রুপে অশিক্ষিত। যার প্রভাব পরেছে তাদের অর্থনীতিতেও। আফগানিস্থানের মাত্র ১৬ % নারী জব করে, যা দেশটির মাতর ৪.০১ % অর্থনিতিতে ভুমিকা রাখে। আফগানিস্থানে পুরুষদের কথাই সর্বেসর্বা, যেকোনো কাজে তারা অগ্রাদিকার পেয়ে থাকে। এবং দেশটির ৬০% নারী সারা জীবন বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন সয্য করে যায়। যার প্রভাবে সেদেশের উঠতি বয়সের মেয়েরা কোন প্রকার প্রতিবাদ করার ও সাহস পায়না। পাশাপাশি ধর্ষণ এর মাত্রা গভীর ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।
০৯. ভারতঃ কোন সন্দেহ নেই যে ভারত তাদের উন্নতির পথে খুব ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এখনো এমন অনেক বিষয় রয়েছে যা তাদের উন্নতির পথে প্রশ্ন তুলতে পারে,According to the National Crime Records Bureau (NCRB) ২০১৩ রিপর্ট বলছে ২৪৯২৩রেপ কেইস ফাইল করা হয়েছে শুধু ২০১২ তে। যার ৯৮% সরাসরি প্রমান সহ ধর্ষণ বলে গন্য করা হয়েছে। এর বাইরে বিশাল একটা ধর্ষণের সংখ্যা কখনো প্রকাস করা হয়নি, ভারতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মেয়ে বাল্যবিবাহের স্বীকার হয়। মোট নারীর ২৭% বাল্যবিবাহের স্বীকার এবং বিহার ও রাজস্থানে বাল্য বিবাহের অনুপাত প্রায় ৬৯%-৬৫% তেমনি অনেক প্রদেশে এই রিপর্ট ভিন্ন ভিন্ন। আছে অনেক বেশি যৌন নির্যাতন ও অসম নারী অধিকার এর ব্যাবধান। ৩% এর মত ভারতীয় নারী এখনো তার জীবনসঙ্গী দ্বারা চরম ভাবে নির্যাতিত।
০৮. সিরিয়াঃ ২০১১ সালের পুর্বে সিরিয়া বেশ ভাল এবং সান্তিপুর্ন দেশ ছিল, ২০১১ সালের গৃহ জুদ্ধের শুরু থেকে সবকিছু খুব দ্রুত ই বদলে যেতে থাকে। এবং নারীদের উপর নির্যাতন বেড়ে যায় অসহনিয় মাত্রায়। ইতিহাসের যে কোন সময়ের চেয়ে গত সাত বছরে এখানে নারীদের উপর নির্যাতন অনেক বেশি, সাথে রয়েচে আইএসআইএর খুন ধর্ষণ ও গণহত্যা, যার সবচেয়ে বেশি সিকার হচ্ছে অসহায় নারীরা। georgetown university inistute for women, pece and security এর মতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নারী নিরজাতনের স্বীকার হয় তার জীবন সঙ্গির কাছে, যার মধ্য খুব সামান্য সংখ্যক নারী নিজেদেরকে নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে পেরেছে। গত এক দশকে সিরিয়ান নারীরা সবচেয়ে পিছিয়ে পরেছে শিক্ষা এবং চাকরির ক্ষেত্রে। বর্তমানে সিরায় মাত্র ১২ নারী চাকরি করে জিবিকা নিরবাহ করছে, এবং বড় একটা জেনারাশন বর্তমানে শিক্ষা থেকে দূরে আছে কারন হচ্ছে একমাত্র সিরিয়ান যুদ্ধ।
০৭. সৌদি আরাবঃ এই মুরর্তে সৌদি আরবে চলছে মুহাম্মদ বিন সালমানের শাসন। এর ই মধ্য ২০১৫ সালে তারা নারী অধিকার বাস্তবায়নে কিছুটা অগ্রগতি দেখিয়েছে, যার মধ্যে একটি হল নারীদের ভোট দানের অধিকার প্রধান ও ২০১৭ সালে নারীদের ড্রাবিং লাইসেন্স প্রদান করা। আপেক্ষিক ভাবে এটা মনে হতে পারে তারা নারী অধিকার বাস্তবায়নে অনেক কিছু করে যাচ্ছে, যা সময় সধিকার হয়তো বাস্তবায়ন করবে, কিন্তু বাস্তবতা এখনো অনেক নেতিবাচক, সৌদি আরবে এখনো মেয়েদের কোন প্রকার সাধিন জীবন যাপন করার অনুমুতি নেই, তারা এখনো পাসপোর্ট করার জন্য বাবা ভাই অথবা স্বামীর কাছ থেকে অনুমুতি নিতে ইভেন জীবন রক্ষার সার্থে কোন প্রকার অপারেশন করাতে হলে ও তাদের অনুমুতি নিএই তবে করতে হবে। সৌদি আরবের নারীদের এখনো নিজেদের ভালো লাগার কথা কোন ভাবেই প্রকাশ করতে পারেনা, পাশাপাশি কোন প্রকার অসঙ্গতি চোখে পরলে তাদের জনসম্মুখে বেত্রাগাত করার পুরনো শাসন এখনো বলবৎ রয়েছে। এবং সেখানে মেয়েদের বাড়ির বাইরে কোন প্রকার কাজ করার অনুমুতি নেই।
০৬. মিশরঃ ইসলামী ওইতিয্যের দেশ মিশর এ রয়েছে অনেক ভয়ঙ্কর নারী নির্জাতন ও নারী অধিকার খর্বের ইতিহাস। নারীরা সেখানে বিয়ে ও বিয়ে বিচ্ছেদের মতো অধিকার পেয়েছে ঠিকই। কিন্তু তারা এখনো রয়েছে অনেক পিছিয়ে। ২০১৭ সালে ইউএন জেন্ডার ইকুইলিটি নিয়ে তাদের রিপর্টে প্রকাশ করেছে, যেখানে তারা ১০০০ মানুষের উপর একটি সমিক্ষা চালিএছে, যার ৫০% পুরুষ মনে করে কখনো মেয়েদের শারীরিক আঘাত করে শাসন করা নিওমের মধ্য পড়ে। এবং এই মতামতের পক্ষে মত দিয়েছে সেখাঙ্কার ৩/১ নারী। এছাড়া সেখানে নারীদের যৌন অঙ্গ কর্তন পৃথিবীর শীর্ষ দেশগুলির মধ্যে একটি। আর এই ধারা ঠিক আছে এবং চালিয়ে যাওয়া উচিৎ বলে মনে করে সেখানকার ৭০% পুরুষ। এছাড়া সেখানে রয়েছে নারীদের সমঅধিকার থেকে বঞ্চিত করার অনেক অনেক দিক। তবে আসার কথা হচ্ছে অনান্য দেশের তুলনায় মিসরের নারীরা অনেক বেশি কর্ম ক্ষেত্রে সক্রিয়।
০৫. ইয়েমেনঃ বর্তমান মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হচ্ছে ইয়েমেন। যার পেছনে রয়েছে সৌদি আরবের অনায়ভাবে চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ। ২০১৫ সাল থেকে সেখানে নেমে এসেছে চরম দারিদ্রতা, এবং নানাবিদ অসঙ্গিতির পাশাপাশি নারী হেনস্তার মত অনেক নিগ্রিহ কাজ। ২০১৭ সালে united ations population fund ২.৬ মিলিয়ন এয়েমেনি মহিলা, ও মেয়ে শিশুদের মাত্রাত্রিক্ত নিরজাতনের স্বীকার হয়েছে বলে রিপর্ট প্রকাশ করেছে। যার মধ্য ৫৩০০০ আছে সরাসরি যৌন নির্যাতন। বেড়েছে ধর্ষণের সংখ্যা ও অনেক বেশি। এর বাইরে প্রায় ৮০০০০ হাজার নারী ও শিসুর মৃত্যুর আশংকা করা হচ্ছে। পিছিয়ে আছে নারী শিক্ষার দিক থকে ও, এছাড়া গৃহ যুদ্ধের আগেও দেশটি নারীদের জন্য তেমন কোন সর্গ ছিলোনা। এমন কি তাদের দেশে কোন নারী সংসদ মেম্বার ছিলনা। ইয়েমেনে নারীদের যেকোনো প্রকার কাজের জন্য তারা পরুষদের অনুমুতি নিতে হয়, এমনকি বিয়ের ক্ষেত্রে ও নিয়মটা একই রকম। georgetown university inistute for women, pece and security মতে দেশটির মাত্র ১% অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করে নারীরা।
০৪. নাইজারঃ নাইজারের নারীরা খুব সামান্য সংখ্যক অধিকার ও স্বাধীনতা পেয়ে থাকে, এবং কমপক্ষে ৮২% নারী কোন প্রকার শিক্ষাই থাকেনা যাদের গড় বয়স অচ্ছে ২০/২৪ এর মধ্য। মাত্র ৩ বছর তারা গড়ে পড়াশোনা নিয়ে ব্যাস্ত থাকার সুযোগ পায়। one campaign এর মতে ১৫-২৪ বছর বয়সী ৮৩% নারী পুরপুরি অক্ষর জ্ঞানহীন। নাইজারের মেয়েদের জীবন বিয়ে পর্যন্তই সিয়ামাবদ্ধ, এবং সেখানে সবচেয়ে বেশি নারী বেচাকেনা হয়ে থাকে বেয়াইনী ভাবে। সাথে দেশটিতে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বাল্য বিবাহের রেট। ইউনিসেফের ২০১৮ এর রিপর্টে বলা হয়েছে যে সেখানে গড়ে ৪ জন মেয়ের মধ্যে ৩ জনের ই বিয়ে হয়ে যায় তাদের বয়স ১৮ বছর পুর্ন হবার আগে। গড়ে ২৮% মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় তাদের দেশের আইনের উল্লেখিত লিগেল বয়স ১৫ হবার আগে, seve the children এর মতে গড়ে প্রায় প্রতি বছর একটি করে সন্তান জন্মদান করে নাইজারের মেয়েরা।
০৩. কঙ্গোঃ পাক্রিতিক সম্পদে ভরপুর দেশের তালিকায় কঙ্গো হচ্ছে সবচেয়ে উপরের সারির একটি দেশ। Peace Women মতে ৬১.২% কঙ্গইয়ান নারী বসবাস করে চরম দারিদ্র সীমার নিচে। যার কঙ্গর পুরুষদের চেয়ে ১০% বেশি। এবং georgetown women pece এর মতে মাত্র ৯% নারী এখানে অর্থনৈতিক কাজের সাথে যুক্ত, ৬৪% কঙ্গইন নারী তাদের জীবন সঙ্গীর নির্যাতনের স্বীকার হয় সারা জীবন ধরে। American Journal of public Health রিপর্টে উঠে এসেছে যে কঙ্গো হচ্ছে ধর্ষণের স্বর্গ রাজ্য। ২০১১ সালের এক গবেষণায় এটা উঠে এসেছে যে ১২% কঙ্গইয়ান নারী ধর্ষণের স্বীকার হচ্ছে, যা প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৪৮ ধর্ষণের মত।
০২. পাকিন্তানঃ পাকিস্তানে নারী অধিকার রক্ষায় তেমন কোন আইন নেই, এবং নারীদের সেখানে নন্যতম সেলারি ও দেয়ায় হয়না, সাথে আছে এসিড সন্ত্রাসের মতো নিকৃষ্ট নির্যাতন। যা বছরে ১০০ উপরে এভারেজ ঘটনা পাওয়া যায়, যার ফল শ্রুতিতে পাকিস্থান সরকার ২০১৭ ফ্রি মেডিকেল সার্ভিসের ঘোষণা দিয়েছে। পাকিস্তানে ৯৫% এসিড সন্ত্রাসের স্বীকার হয় নারীরা। পাকিস্তানে জোর পূর্বক বিয়ে ও বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা নিতান্তই সাধারন, আছে তালাকের পড় তালাকপ্রাপ্ত নারীর পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে হেনস্তার অভিযোগ, সাথে রয়েছে হত্যার অভিযোগ, প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১০০০ নারী মার্ডার হয়ে থাকে পাকিস্তানে। এসব হত্যার বিশির ভাগই কোন বিচার হয়না, অথবা থাকে বিচারাধীন। শুধু বিয়ে ও বিয়ের পাত্র পছন্দ করা নিয়ে ও খুনের মামলা রয়েছে অনেক বেশি। ১২% পাকিস্তানি নারীর বয়স ১৮-৪৯ এবং তারা বিয়ে করে প্রায় বাচ্ছা বয়সেই, যার ফলে প্রায় ৫ মিলিয়ন পাকিস্তানি নারীর মৃত্যু হয়। এসিয়ার শীর্ষ ও বিশের সবচেয়ে বেশি ধর্ষণের রেকর্ড রয়েছে পাকিস্তানে। রয়েছে সামাজিক ও ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে নারী সমাজ। বলা হয়ে থাকে দক্ষিন এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি নারী নির্যাতনের স্বীকার হয়ে থাকে পাকিস্তানি নাইরিয়ারা।
0১. সুদানঃ georgetown university inistute for women, pece and security হিসাব অনুযায়ী মাত্র ৩ বছর ব্যয় করে শিক্ষার ক্ষেত্রে, যা দেশটির মাত্র ১০% দেশের অর্থনীতি তারা নিয়ন্ত্রণ করে। সুদানে শুধু মেয়েদের জীবনই কঠিন নয়, বিবাহিত মেয়েদের জীবন সবচেয়ে বেশি কঠিন। ইউনিসেফের মতে ৩৪% সুদানি নারীর বয়স ২০-২৪ বছরের মধ্যে, এবং তারা অলরেডি বিবাহিত যখন তাদের বয়স ১৮ যা প্রমান করে সেখানে নারীরা কেমন কঠিন জীবন যাপন করছে। এছাড়া সুদানে ৯৫% নারীর যৌন অঙ্গ কর্তন করা হয়ে থাকে।
No comments:
Post a Comment